ট্রান্সফরমার খুঁটিতে রেখেই ভেতর থেকে তামার তার সরাচ্ছে চোরচক্র!
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
২৯-১২-২০২৪ ০৩:২৫:৫৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৯-১২-২০২৪ ০৩:২৫:৫৪ অপরাহ্ন
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে থামানো যাচ্ছে না বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারের তার চুরি। গত দুই বছরে পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুতের ১২৭টি ট্রান্সফমারের ভেতরের মূল উপকরণ চুরি হয়েছে। সম্প্রতি দীঘা গ্রামে একরাতে ছয়টি চুরির ঘটনায় দেড়শ একর জমিতে সেচ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। একের পর এক চুরি হলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে চক্রটি।
জানা গেছে, খুঁটিতে ট্রান্সফরমার থাকলেও ভেতর থেকে খুলে নেয়া হয়েছে মূল উপকরণ তামার তার। নিচে পড়ে আছে বিদ্যুতের লাইনের কিছু ধাতব উপকরণ। সম্প্রতি এমন চুরির ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের দীঘা গ্রামে।
গফরগাঁওয়ে থামানো যাচ্ছে না বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারের তার চুরি। গত দুই বছরে পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুতের ১২৭টি ট্রান্সফমারের ভেতরের মূল উপকরণ চুরি হয়েছে। সম্প্রতি দীঘা গ্রামে একরাতে ছয়টি চুরির ঘটনায় দেড়শ একর জমিতে সেচ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। কৃষকরা বলেছেন, এখনই সেচ ও আবাদের সময়। কিন্তু এ সময়টাতে বিদ্যুৎ নেই। সেচ দিতে পারছি না আমরা। এই চুরিতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। দ্রুত সমাধান না হলে তো আমরা বিপদে পড়ে যাবো।
ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় সাবেক পুলিশ সদস্য মাকছুদুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের একটি দল। চুরি হওয়া তিনটি ট্রান্সফরমার দিয়ে সেচ দিতেন মাকছুদুল ইসলাম।তিনি বলেন, ‘এখন বোরো মৌসুমের জন্য সেচ শুরু হতো। কিন্তু চোরচক্র খুঁটিতে ট্রান্সফরমার রেখে ভেতর থেকে তামার তার বের করে নিয়ে গেছে। আমার তিনটি ট্রান্সফরমার নতুন করে কিনতে ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা দরকার। আমার জন্য এটি খুবই কঠিন হয়ে গেছে। তবুও চেষ্টা করছি। কিন্তু আবার এমন হলে আর কেনা সম্ভব হবে না। আমরা চাই এ ঘটনায় জড়িতরা দ্রুত আইনের আওতায় আসুক।’
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, ৫ কেভি থেকে ২৫ কেভি পর্যন্ত ক্ষমতার ট্রান্সফরমারে ৯ কেজি থেকে প্রায় ৩০ কেজি তামার তার থাকে। পুরনো তামার তার প্রায় ১ হাজার টাকা কেজি করে বিক্রি করা যায়। চুরি ঠেকাতে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে।
গফরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. জিয়াউর রহমান খান বলেন, ‘ট্রান্সফরমার চুরির পর প্রতিটি ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়। ট্রান্সফরমারের ভেতরে থাকা কয়েলের জন্যই চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র গাজীপুর ও কিশোরগঞ্জ এলাকা থেকে আসে, এলাকার কিছু লোকও জড়িত। শীত মৌসুমে চুরির প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। মাঝে কিছু সময় চুরি কমলেও আবার বেড়েছে। চুরি রোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা চাই।’
গফরগাঁও পিডিবির বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘এসব ঘটনায় নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ ডায়েরি করা হয়, কিন্তু চোর ধরা পড়ছে না। এটা সবার জন্য ভোগান্তি। আমাদের একার পক্ষে চুরি রোধ সম্ভব নয়, সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে বিশেষ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।’
আর গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘চুরি রোধে আমাদের টহল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পুরনো চোরদেরও নজরদারিতে রাখা হয়েছে। চুরি রোধে পুরো এলাকায় পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।’গফরগাঁও উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের ৬৬ হাজার ৩৬ জন ও পিডিবির প্রায় ৭১ হাজার গ্রাহক রয়েছেন।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স